পুনর্জন্মের ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে হাসপাতালেই ফের বিবাহ বন্ধনে করোনা জয়ী দম্পতি

18th December 2020 9:23 am হুগলী
পুনর্জন্মের ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে হাসপাতালেই ফের বিবাহ বন্ধনে করোনা জয়ী দম্পতি


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) : কোনো সিনেমার গল্প নয়, মহামারীকালে ঘটে যাওয়া একাধিক আশ্চর্য ঘটনার মধ্যে এটিও একটি। নবদ্বীপের প্রফুল্ল নগরের নিবাসী শ্যামল রায় (৫১) ও তার স্ত্রী রুমা রায় (৪২)। গত মাসের ২৮ তারিখ করোনা আক্রান্ত হন । শ্যামল বাবু একরকম আসিম্পটমেটিক হওয়ায়, তার সমস্যা না হলেও তার স্ত্রী রুমা দেবী হয়ে পড়েন গুরুতর অসুস্থ। নিজের জেলায় একাধিক হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়েও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায়। গঙ্গা পেরিয়ে চুঁচুড়ার বেসরকারি  সেবাসদনে নিজের স্ত্রীকে ভর্তি করান তিনি। তার প্রাথমিক চিকিৎসা করেই চিকিৎসক জানিয়ে দেন, দেহে সংক্রামণের মাত্রা ৯৫%, এবং অক্সিজেন লেভেল ৫৪% এটা শোনার পর কিছুটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাই একরকম সব আশা ছেড়ে দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয় রুমা দেবীর। মন জোর শক্ত করতে বলে,ডাক্তারবাবুরা। জানান তারা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবেন। নিজের স্ত্রীয়ের এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো ভেঙে পড়েন শ্যামল বাবু ও তার পরিবার। কিন্তু অসম্ভব হলেও কিছুদিনের চিকিৎসার পরই দেখা যায় চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতার দিকে ফিরে আসেন রুমা দেবী। করোনার সাথে এই যুদ্ধে ডাক্তারবাবুদের অক্লান্ত পরিশ্রম, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় আজ সেই করোনাকে জয় করে এক রাস আশা নিয়ে  ঘরে ফিরে যাচ্ছেন রুমা দেবী। কিন্তু এটা শুধু ঘরে ফেরার কাহিনী হতে পারতো না, যেখানে সব আশাই নিরাশায় পরিণত হয়েছিল, হারিয়েছিল আস্থা, সেখান থেকেই এই পুনর্জন্মের ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে, হাসপাতালের মধ্যেই পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন করোনাজয়ী এই দম্পতি। এর পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্য সামান্য বিবাহ ভোজেরও আয়োজন ছিল । করোনা জয় ও বিবাহ পর্ব মিটিয়ে পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন রুমা দেবী। এই ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে, তার স্বামী শ্যামল বাবু জানান, তারা সব আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু তারপরও যেভাবে এই হাসপাতালের ডাক্তারবাবুরা চিকিৎসা করে তার স্ত্রীরকে তার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।  তাদের অবদান তিনি মুখে বলে ব্যক্ত করতে পারবেন না। শুধু একটাই ক্ষোভ ঝরে পড়ছে তার গলায়। এখানে আসার পূর্বেও তিনি দুটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন স্ত্রীকে।  কিন্তু সেখানের চিকিৎসা ব্যাবস্থা হাতে যদি স্ত্রীকে ছেড়ে দিতেন তিনি, তাহলে হয়তো এইদিনের সাক্ষী তিনি হতে পারতেন না। অপরদিকে রুমা দেবীকে নিজের জীবনে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশি চিকিৎসক থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই-ই। তারা জানিয়েছেন শুরুতে বিষয়টা মুশকিল মনে হলেও, ধীরে ধীরে চিকিৎসায় সাড়া দিতে শুরু করেন তিনি।  তারপর আস্তে আস্তে সব বাধা কাটিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়।





Others News

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) :  নিম্ন চাপের জেরে শনিবার থেকে অকাল বৃষ্টিতে মাথায় হাত চাষীদের।
জেলায় আলু চাষে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে কয়েক লক্ষ টাকার উপর বলে দাবি চাষীদের। ধান জমিতে যেমন ক্ষতির পাশাপাশি হুগলী জেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষতি এবার আলু চাষে। চলতি বছরে বার বার নিম্নচাপ  চাপের জেরে যেভাবে ধান চাষ পিছিয়ে ছিল ঠিক আলু চাষও পিছিয়ে ছিল প্রায় পনোর দিন। তবে গত শুক্রবার পযন্ত হুগলী জেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে বসানো হয়ে গিয়েছিল আলু এবং ৬০ শতাংশ জমি আলু চাষ উপযোগী করে তুলে ছিলেন চাষীরা। ধান চাষের মত আলু চাষের শুরুতে এবার কাল হয়ে উঠলো অকাল বৃষ্টি। অকাল বৃষ্টির ফলে যে সব জমিতে ইতি মধ্যেই আলু বসানো হয়ে গিয়েছিল, সেই সব জমিতে জল জমে থৈ থৈ করছে। ফলে জমিতে বসানো সমস্ত আলু বীজ পচে নষ্ট হতে বসেছে।  কারণ আলু বসানোর পর অন্তত পনেরো থেকে কুড়ি দিন কোনো জলের প্রয়োজন পরে না আলু চাষের ক্ষত্রে।
এ বছর এক বিঘা জমিতে চাষ উপযোগী করে আলু বসানো পযন্ত চাষীদের খরচ পড়েছে প্রায় পনেরো হাজার টাকা অন্যদিকে আলু বসানোর আগে পর্যন্ত  এক বিঘা জমিকে  চাষ উপযোগী করে তুলতে খরচ পড়েছে প্রায় সাত হাজার টাকা। অর্থাৎ ইতি মধ্যে নিম্ন চাপের জেরে অকাল বর্ষণে হুগলী জেলার ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে লক্ষ  লক্ষ টাকার উপর। জেলায় আলু চাষের জমির পরিমান ৯০ হাজার হেক্টর জমি। সেমবার সকাল থেকেই  আলু জমি থেকে জল বের করে আলু বীজ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন চাষীরা। চাষীদের দাবি অকাল বর্ষণে একেবারে সর্বস্বান্ত  হয়ে পড়েছে। আবার নতুন করে আলু বসানো বা জমি তৈরি করে আবার আলু বসানো অনেকের পক্ষেই আর সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে আবহাওয়া উপযোগী হলে পুনরায় জমি আলু চাষের উপযোগী করে আলু বসাতে সময় লাগতে পারে পনেরো থেকে কুড়ি দিন। ফলে আলু চাষে ফলন যেমন কমবে খাবার আলুর জোগানেও পড়বে টান। আগামী দিনে ধানের ক্ষতির ফলে যেমন  চালের যোগান টান পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।  ঠিক তেমনি আগামী দিনে খাবার আলুর জোগানেও টান পড়বে বলে মত চাষীদের।